বিশেষ প্রতিনিধি:
আড়াইহাজারে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা পাকা ধান কাটতে পারছে না। এর মধ্যে শুরু হয়েছে মৌসুমী বৃষ্টিপাত। অনেক জমি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিতায় পড়েছে অনেক কৃষক। তবে হঠ্যাৎ শিলাবৃষ্টি হলে ধান ব্যাপকভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সামান্য কিছু জমির কাটাও হয়েছে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক কৃষকের পাকা ধান এখনো জমিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন দুইটি মেশিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে আর্থিক সংকট থাকায় অনেকের পক্ষেই মেশিনে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ১৫,২৫০ হেক্টোর। এর মধ্যে ১০,২০০ হেক্টোর জমিতে চলতি মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের সংখ্যা ৪৫,৬৫০জন। উপজেলার ঝাউগড়া দক্ষিণপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল রাজ্জাক জানান, তিনি চলতি বোরো মৌসুমে ৫৫ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে ধান পেকে গেছে। কিন্তু সংকটের কারণে তিনি ধান কাটতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটতে ৬ থকে ৭ হাজার টাকা দাবী করছে শ্রমিকরা। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ধান কাটা অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় ফতেপুর এলাকার কৃষক আলী হোসেন বলেন, তিনি ৯০ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। সময় মতো পাকা ধান কাটতে না পারায় জমিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে শ্রমিকরা ধান কাটতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তিনি আরও বলেন, আমার মতো অনেকেই সময় মতো জমির পাকা ধান কাটতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। স্থানীয় কামরানির চর এলাকার ধান কাটার শ্রমিক সর্দার আব্দুল বাতেন জানান, তার সঙ্গে ৬জন ধান কাটার শ্রমিক রয়েছেন। ৩০ শতাংশের একটি জমির ধান কাটতে তিনি এলাকা ভেদে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা নিচ্ছেন। জমির মালিকদের মধ্যে অনেকেই তাকে অগ্রীম টাকা দিয়ে রেখেছেন। শ্রমিকরা একের পর এক জমির ধান কেটে দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে চাচ্ছেন না। এতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী আনোয়ার বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন ধান কাটার দুইটি মেশিন রয়েছে। তারা ৩০ শতাংশের একটি জমির ধান কাটতে ২,০০০ থেকে ২,৫০০ টাকা নিচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে ধান কাটার মেশিন নেই। কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে ধান কেটে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। শ্রমিকদের কোনো সংকট নেই। তিনি আরও বলেন, লকডাউনের কারণে এলাকায় শ্রমিকরা বেকার। এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক জমির ধান কাটা সম্পূর্ণ হয়েছে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।