জাকির হোসেন, আড়াইহাজার প্রতিনিধি:
(কোভিড-১৯) করোনাভাইরাসকে অপেক্ষা করে আড়াইহাজারে বিভিন্ন এলাকায় বিপনী বিতান ও শপিংমলগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শপিংমলগুলোর প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ঈদের কেনাকাটায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। মার্কেটগুলোর ভিতরে জীবাণু নাশক ম্প্রে করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ক্রেতারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার না করে অবাধে চলাচল করছেন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা পাইকারী মাল কিনতে ঢাকা ও করোনা হটম্পর্ট নারায়ণগঞ্জে যাতায়ত করছেন। এতে কমিউনিটি কনট্রাক হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ম্পিনিং মিলগুলো খোলা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক শ্রমিক পরিবহনে করে প্রতিদিন গাদাগাদি করে যাতায়ত করছেন। এতে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে প্রতিদিনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা (শ্যাম্পল) সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ৫৫৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪২জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ্য হয়েছেন ১৫ জন। বুধবার বেলা ১১টায় আড়াইহাজার পৌরসভা বাজারের পিংকি সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্রেতাই তা মানছে না। অনেকের মুখে ও হাতে ছিল না কোনো সুরক্ষা সামগ্রী। ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে অনেকের মধ্যে উদাসহীনতা দেখা গেছে। কেনাকাটা করতে আসা স্থানীয় উচিতপুরা এলাকারবাসিন্দা মধ্যবয়সি নারী বিলকিস বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার ভাষায় বলেন, ‘আমি পোলা-মাইয়াদের জন্য কাপড়-চোপড় কিনতে আইছি। হাত ধোইয়া দোকানে ঢুকি নাই। হাত ধোইলে কি হইবো। করোনা-টরোনা কি আমি বুঝি না। করোনায় আমগোরে ধরব না।’ পিংকি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, সচেতন ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসছেন না। যারাই আসছেন, তারা সাধারণ ক্রেতা। সচেতন ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসবেন বলে মনে হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, তবে মার্কেটে ক্রেতার সমাগম হচ্ছে। কিন্তু অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। অসচেতন ক্রেতার মাধ্যমে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা সংক্রমিত হয়ে যেতে পারেন। আড়াইহাজার পৌরসভা বাজারের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন বলেন, ঈদের কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি ভেঙে পড়েছে। বিপনী বিতান ও শপিংমলে গাদাগাদি করে কেনাকাটা করা হচ্ছে। এতে ব্যাপক হারে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। আড়াইহাজার নিউ মার্কেটের মালিক আব্দুল হেকিম বলেন, মার্কেটের প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। মুখে মাস্ক পরিধান ব্যতিত ক্রেতাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। শাহজালাল সুপার মার্কেটের সভাপতি ইয়ানূছ আলী বলেন, দুই একদিনের মধ্যে মার্কেটের প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। হাবিব সুপার মার্কেটের পাদুকা ব্যবসায়ী নবী হোসেন বলেন, মাল কিনতে প্রতিদিন পিকআপে করে ব্যবসায়ীরা ঢাকা ও করোনা হটম্পর্ট নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পাইকারি মার্কেটে যাতায়ত করছেন। এতে কমিউনিটি সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সায়মা আফরোজ ইভা বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কেনাকাটা করতে হবে। ঈদের কেনাকাটা করতে গিয়ে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শপিংমল ও বিপনী বিতানের প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মুখে মাস্ক পরিধান করতে হবে। আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, বিপনী বিতানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ হোসেন বলেন, ইতো মধ্যে আমরা উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন কিনা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিপনী বিতানে মালিকগণদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এর ব্যতয় ঘটলে প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও জনগণ সকলকে আহবান করব, আপনারা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।