বিশেষ সংবাদদাতা:
আড়াইহাজারে অটোচালক চাঞ্চল্যকর জামান হত্যা মামলায় র্যাব-১১ এর সদস্যদের হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। র্যাব- ১১ এর অধিনায়ক লে: কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার (পিবিজিএম ও পিবিজিএমএস)-এর স্বাক্ষরিত একটি প্রেসবিপ্তত্তিতে রোববার বিকালে তথ্য জানানো হয়। প্রেস বিপ্তত্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ মার্চ জামান (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিখোঁজের ঘটনার প্রেক্ষিতে তার ছোট ভাই জাকির হোসেন (৪২) নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তখন থেকেই অনেক খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ৩ দিন পর ৩১ মার্চ সকাল ১১টার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানাধীন মারুরাদী এলাকায় হাত-পা বাঁধা ও দুই চোখ উপড়ে ফেলা অবস্থায় জামানের উদ্ধার করা হয়। নিহত জামান এর ছোটভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। যার মামলা নং-০২(০৪)২০২০ইং। উক্ত হত্যাকান্ডের পর থেকেই র্যাব-১১এর একটি বিশেষ দল হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। ঘটনার পর প্রায় আড়াই মাস নিবিড় তদন্তের পর গত কয়েদিন যাবৎ বেশ কয়েকটি স্থানে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। ১৩ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আড়াইহাজার থানাধীন নাগেরচর এলাকা থেকে মূল হত্যাকারী সাইফুল ইসলাম (৩২) কে আটক করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করে এই নৃসংশ হত্যাকান্ডের সঙ্গে সাইফুল জড়িত এবং তার পরিকল্পনায় আরো কয়েকজন সহযোগীর পরস্পর যোগসাজসে জামানকে হত্যা করেছে। তার দেয়া তথ্য মোতাবেক ঘটনায় জড়িত অপর এক সহযোগী বাদশা (৩০)কে রাতে উপজেলার বগাদি বাজার হতে গ্রেফতার করা হয়। প্রেস বিপ্তত্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইফুল ইসলাম এর বাড়ী আড়াইহাজার থানাধীন নাগেরচর এবং বাদশা এর বাড়ী বগাদি এলাকায়। নিহত জামান পেশায় ছিলেন একজন অটোরিক্সা চালক। গ্রেফতারকৃত সাইফুল ইসলাম ও বাদশা’দের সঙ্গে ভিকটিম নিহত জামানের অটোরিক্সা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ ছিল। তাছাড়া ঘটনার এক মাস পূর্বে পাওনা টাকা নিয়ে নিহত জামানের ভাই জাকির হোসেন সাইফুলকে রাস্তায় অপমান করে। তার জের ধরেই সাইফুল ইসলাম, আক্তার ও বাদশাহ সহ জামানকে খুন করার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন জামানকে সঙ্গে নিয়ে সাইফুল, আক্তার ও বাদশাহ একসাথে বাজারে যায় এবং সাইফুল বাজারে গিয়ে আক্তারকে গামছা কিনার জন্য ৪৫ টাকা দেয়। আক্তার গামছা কিনে নিয়ে আসার পর তারা তিনজন জামানকে সঙ্গে নিয়ে নাগেরচর চৌরাস্তায় চা খায়। চা খাওয়ার পর তারা সবাই চৌরাস্তা ব্রীজের কাছে যায়। ব্রীজে পৌছার পর সাইফুল ইসলাম আক্তার ও বাদশা দুষ্টামী করে জামানকে বলে তোর গলা ধরে মেরে ফেলবো। একই সময়ে বাদশা মাফ চাওয়ার কৌশলে জামানের পা ধরে টান দিয়ে জামানকে মাটিতে ফেলে দেয়। তারপর মূলহত্যাকারী সাইফুল ইসলাম জামানের গলা চেপে ধরে। তখন আক্তার বলে গলা চেপে ধরলে শব্দ হবে তার পরিবর্তে আক্তার গামছা দিয়ে মুখে ও গলায় পেঁচিয়ে ধরার পর ছুরি দিয়ে গলায় খুচিয়ে খুচিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে। তারা জামানের মৃত দেহ পাশের কলাবাগানের ভিতরে ফেলে দিয়ে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার লোমহষর্ক বর্নণা দিয়ে জবানবন্দী প্রদান করে। আসামিদের আড়াইহাজার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।