মোঃ সাহাব উদ্দিন কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা :
কক্সবাজারে করোনা মোকাবিলায় পরিশ্রম করে যাচ্ছে জেলা পুলিশ। আজ ২৬ শে জুন পুরো কক্সবাজার জেলায় মানুষকে সচেতন করতে এবং লকডাউন বাস্তবায়ন করতে রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা। পাশাপাশি নিজেদের কল্যাণ তহবিল ও সিনিয়র এবং জুনিয়র কর্মকর্তাদের আর্থিক সহযোগিতার বাজেট নিয়ে চলছে সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা। যা মানবিক বিষয় বিবেচনা করে সার্বিক কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম। জেলা পুলিশের সূত্রমতে, মাঠে-ময়দানে করোনা মোকাবিলায় যুদ্ধ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৫ জন পুলিশ সদস্য। উপসর্গ দেখা দেয়ায় আইসোলেশনে আছেন ৭৩ জন। যাদের এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়নি। নমুনা সংগ্রহ হলেও আজ পর্যন্ত ফলাফল হাতে আসেনি এমন পুলিশ সদস্য রয়েছেন ১৭৩ জন। করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ করেছে ২শ’ পুলিশ সদস্য। তারপরও মনোবল হারায়নি পুলিশ। মানবিক সেবা ও করোনা মহামারী ঠেকাতে পুলিশ কাজ করছে আন্তরিকতা দিয়ে। কক্সবাজার জেলায় দ্বিতীয়বারের মতো রেডজোন ঘোষণা করে লকডাউন চলমান পৌর এলাকায় প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু তার পরও দমানো যাচ্ছে না করোনার সংক্রমণ। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহাজান কবীর বলেন, রাস্তায় দায়িত্বপালন করতে গিয়ে পুলিশ একের পর এক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু তার পরও সরে দাঁড়ায়নি পুলিশ। জীবন বাজি রেখে কাজ করছে। শুধু করোনা নয় পাশাপাশি আইন-শৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে নির্ঘুম সময় যাচ্ছে পুলিশের। যা অন্যান্য জেলা থেকে খুবই ভিন্ন। এ দিকে জেলাবাসীর পাশাপাশি আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নজরদারি, আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা, লকডাউন কার্যকর ও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবা-যত্ন, দাফন-কাফন, করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে শনাক্তকরণের কাজেই দিশেহারা পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য। জেলা পুলিশের পাশাপাশি উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ। দুই উপজেলায় ৭ লাখ নাগরিকসহ প্রায় ২০ লাখ জগোষ্ঠীর শান্তি-শৃংখলা রক্ষা ও করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে ৬৫০ জনের বেশি পুলিশ ও আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ। ইতিমধ্যে শিবিরে করোনায় ৪ জনের অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬০ জনের অধিক। আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছে প্রায় ১৭৩ জন। পুরো শিবিরে করোনা ছড়িয়ে পড়লে নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে, এরকম আতঙ্কে আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ মানবিকসেবায় নিয়োজিত কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, চরম ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যদের করোনা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আইসোলেশনে রাখা হয়েছে থানা পুলিশের অনেক সদস্যকে। কিন্তু তার পরও থেমে থাকেনি পুলিশি কার্যক্রম। করোনার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মাদক নির্মূলেও অভিযান চলছে। অতিরিক্ত সিভিল সার্জন মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আলমগীর বলেন, করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দিনে দুইবার অক্সিজেন ও তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে অনীহা নেই পুলিশ সদস্যদের। কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, মানবিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবং সরকারি নির্দেশনায় করোনার মহামারী রোধে যথেষ্ট আন্তরিকতার সহিত কক্সবাজার জেলা পুলিশ কাজ করছে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।