শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু :সন্ধ্যার পর বন্ধ থাকবে দুর্গাপূজার মন্ডপ
নিলয় ধর, যশোর সংবাদদাতা :
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বুধবার ছিল দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর বোধন। আজ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে দেশের পূজা মন্ডপ গুলো। মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা-এই তিন পর্ব মিলে হয়ে থাকে দুর্গোৎসব। তবে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এবার শারদীয় ‘দুর্গোৎসব’কে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ এবার কোনো উৎসব হবে না, শুধু পূজা হবে দেবীপক্ষের শুরু হয় যে অমাবস্যায়, সেদিন হয় মহালয়া। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সেদিন ‘কন্যারূপে’ মর্তে আসেন দেবী দুর্গা। গত (১৭ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বুধবার পঞ্চমী তিথিতে দেবীর বোধন হয়। বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল অনুষ্ঠান। আগামী সোমবার(২৬ অক্টোবর) মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। মহামারি করোনার কারণে এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা অর্চনার মাধ্যমে মন্দির বা মন্ডপ প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনার বিস্তার রোধে সন্ধ্যারতি বা সন্ধ্যার পর সর্বসাধারণের জন্য দুর্গাপূজার মন্দির/মন্ডপ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। ফলে সন্ধ্যার পর এবার পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা কিংবা আরতি করা থেকে বিরত থাকতে হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের। বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। বিজ্ঞপ্তিতে পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেছেন, (১৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছে জনসমাগমে কেউ যেন মাস্ক ছাড়া বের না হয়। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে মর্মেও নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রকারান্তরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে পুনরায় জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছে। দেশের চিকিৎসকরাও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই সম্পর্কে জনগণকে বারবার সতর্ক করছেন। আরও বলেছেন তারা , বর্তমান পরিস্থিতিতে সশরীরে পূজায় অংশগ্রহণ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের করোনার কাছে আত্মসমর্পণ করে জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে নাকি এবারের পূজায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে- তা আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে যে, দুর্গাপূজা ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। সবার অংশগ্রহণে করোনার বিস্তারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর দায় নিজের ঘাড়ে নেওয়া থেকে দূরে থাকুন। আরও বলেছেন, সন্ধ্যারতির পর সর্বসাধারণের জন্য মন্দির/মন্ডপ বন্ধ রাখুন। মা সর্বত্র বিরাজমান। বাড়িতে থেকে আপনার প্রণাম মা নিশ্চয়ই গ্রহণ করবে। তিনি বঞ্চিত করবেন না তার আশীর্বাদ থেকে। সবস্তরের কমিটির নেতাদের তাদের এই বার্তা দ্রুত গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধও জানায় পূজা উদযাপন পরিষদ।