Logo
HEL [tta_listen_btn]

না’গঞ্জে ২১৫ মন্ডপে দুর্গাপূজা শুরু আজ

না’গঞ্জে ২১৫ মন্ডপে দুর্গাপূজা শুরু আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা:
সোমবার (১১ অক্টোবর) মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী শুক্রবার(১৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালির পাঁচদিনব্যাপী এই শারদোৎসবের। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে এখন সাড়া জেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে জেলাজুড়ে পূজা মন্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ঘোড়া এমন একটি বাহন যা যুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঘোড়ার পায়ের শব্দও যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। তাই পঞ্জিকা মতেই ঘোটকে আগমন মানেই ছত্রভঙ্গের কথাই বলা হয়। অর্থাৎ এই সময়ে যুদ্ধ, অশান্তি, হানাহানির সম্ভাবনা থাকে। পঞ্জিকা বলছে, মা দুর্গার এবার দোলায় গমন। দোলায় গমনের ফলাফল হল মড়ক লাগা। রোববার সারা জেলার পূজামÐপগুলোতে দুর্গা দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হয়। মÐপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী এবং ১৫ অক্টোবর দশমী। এবার সারা জেলায় ২১৫টি পূজামÐপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়। এ বছর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সেলিম ওসমানের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের পূজা মন্ডপ গুলো থেকে ৫৫০টি অসহায় পরিবারের নারীদের হাতে একটি করে সেলাই মেশিন এবং চলতি মূলধন হিসেবে নগদ ২৫০০ করে টাকা তুলে দেওয়া হবে। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্তি¡ক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে ভক্তদের প্রতি অনুরোধ করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ। এছাড়া বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে দিনের আলো থাকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার অনুরোধ করেছে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার জানান, গত বছর থেকে এই বার মন্ডপ এর সংখ্যা বাড়ছে। আর আমাদের এইখানে শেষ মুহুর্তের প্রস্ততি সম্পন্ন। মন্দিরে মায়ের কাজ চলছে কালকে যাতে সুন্দর ভাবে মাকে বরণ করতে পারি। আমরা প্রতিটা মন্দিরে ম্যাটাল ডিটেক্টর লাগানোর কথা বলছি, তবে এইখানে সামর্থের বিষয় আছে। আমাদের কিছু সংখ্যাক মন্দিরে থাকবে যেমন- চাষাড়া, আমলাপাড়া, টানবাজারসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক মন্দিরে থাকবে। তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাস যাতে বাড়তে না পারে আমরা তাই বাড়তি সতর্কতা নিয়েছি। গত বছর যে আলোকে পূজা হইছে এবারও সেই ভাবেই হবে। প্রতিটা মন্ডপে আমরা করোনার জন্য বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থ করছি। যাতে করোনা মহামারী আমাদের দেশ থেকে সারা বিশ্ব থেকে দূর হয়। আমরা প্রতিটা মন্দিরে সেনিটাইজার, হান্ডওয়াসের ব্যবস্থা করছি। জেলার প্রতিটি পূজামÐপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও বিডিআর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সব রকমের অপত্তিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, এবারের পূজায় আমাদের ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ইতিমধ্যেই আমরা পূজা উদযাপন কমিটির সাথে আলাপ করেছি। এবারের পূজার মন্ডপ সংখ্যা যেহেতু বেশি, তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেকটা জোরদার হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ৭৮৭জন কর্মকর্তা পূজা মন্ডপ গুলোতে সার্বক্ষনিক নজরদারি করবেন। এছাড়া আমাদের আরও অনেক কর্মকর্তা সাদা পোশাকে থাকবেন। পাশাপাশি আমাদের কিছু গোপন কর্মকর্তারা তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সার্বক্ষনিক মাঠে থাকবেন। আমরা নারায়ণগঞ্জকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com