দেশের আলো রিপোর্ট
কোলাহলপূর্ণ যান্ত্রিক জীবনে শহরবাসীর মনে একটু প্রশান্তির ছোয়া দিতে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল পার্কের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে দৃষ্টিনন্দন এ পার্কটি এখন হকারদের দখলে। এদিকে, হকার উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান এনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে হাতিরঝিলের আদলে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল পার্কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে পরিত্যক্ত পুকুর খনন এবং জিমখানা বস্তি উচ্ছেদ করে শুরু হয় পার্কের নির্মাণ কাজ। আরও জানা গেছে, কাজ শুরুর পূর্বেই একজন এমপি বলেছিলেন হাতিরঝিল না বানিয়ে মতিঝিল বানালে ভালো হবে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। তাছাড়া, মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে রেল মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ করা হয় পার্কটির নির্মাণ কাজ। তবে নগরবাসীর কথা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের কথা চিন্তা করে, তাদের অবসর সময় কাটানোর লক্ষ্যে সকলের সাথে লড়াই করে পুণরায় শুরু করেন নির্মাণ কাজ। তবে, এনসিসির মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সেই আশায় গুড়েবালি। পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে হাটা-চলা করতে পারছেনা নারী-শিশুরা। ফলে এনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণাধীন পার্কটি উদ্বোধনের পূর্বেই তার গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে বলে মনে করছে শহরবাসী। শহরবাসীর মতে, সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতার কারণে উদ্বোধনের পূর্বেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে পার্কটি। একবার যারা পার্কটিতে আসছেন, তীক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই ফিরছেন তারা সকলে। সঠিক তদারকি না করার কারণে এনসিসির আচরণে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ শহরবাসী। সাইনবোর্ড এলাকা থেকে পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা এক নারী বলেন, ঢাকার রাস্তায় প্রচুর যানজট হয় বলে ঢাকার কোনো পার্কে না গিয়ে শেখ রাসেল পার্কে এসেছি একটু সময় কাটাতে। কিন্তু এখানে এসেও চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে, পার্কের সামনেও প্রচুর যানজট ছিলো। মূলত পার্কের সামনের অবৈধ দোকানগুলোর কারণেই এ যানজট বলে জানান তিনি। সৈয়দপুর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা এক নারী বলেন, জমকালো আতশবাজি দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে, পার্কের সামনে যেভাবে দোকান ও চেয়ার-টেবিল বসানো হয়েছে তাতে করে পার্কের পুরো অংশ ঘুরে দেখতে পারলাম না। স্বাচ্ছন্দ্যে হাটা-চলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে পার্ক দখলকারী এসব ব্যবসায়ীরা। মেয়র আইভীর উচিত পার্কটির বিষয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিয়েই ব্যবসা চালাচ্ছে তারা। পুলিশকেও দিচ্ছে মাসোহারা। স্থানীয় গুন্ডা-পান্ডারা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে পার্কের রাস্তা-ফুটপাতের দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে বলেও জানায় তারা। জনসাধারণের দাবী, এসব হকারদের উচ্ছেদ করে ফুটপাত উন্মুক্ত করে দেয়া হোক জনসাধারণের জন্য। তা নাহলে শত বাধা পেরিয়ে পার্ক নির্মাণে মেয়র আইভীর যে অর্জন তা ¤øান হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করেন তারা। তাছাড়া, বঙ্গবন্ধু সড়কের হকার নিয়ে সোচ্চার থাকলেও নিজ এলাকা তথা রাসেল পার্কের হকার উচ্ছেদের বিষয়ে মেয়রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পার্কের ফুটপাত ও রাস্তা দখলের বিষয়টি স্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন বলেন, বেশ কিছু অস্থায়ী দোকানপাট বসছে ওখানে, রাস্তার পাশে, লেকের ধারে। আমরা ওগুলো নিয়ে কথা বলছি এবং আমরা ব্যবস্থা নিবো। কিভাবে রাসেল পার্কের সৌন্দর্য বাড়ানো যায় তা নিয়ে এনসিসি ভাবছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।