Logo
HEL [tta_listen_btn]

আ’লীগ কার্যালয় ভাঙ্গার উস্কানিদাতাদের চিনি : শামীম ওসমান

মাসদাইরে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুরের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি এই ঘটনা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি এবং পুলিশ সুপারকে জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। আমার ছবি ভেঙ্গেছে তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভেঙ্গেছে। এই ছবিগুলো কারা ভেঙেছে কিংবা কারা এগুলোর উস্কানি দিতে পারে তা সবাই জানে। জনগণ হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিক। যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন ব্যবস্থা নিতে না পারে তাহলে জনগণকে নিয়ে এটি প্রতিরোধ করা আমাদের জন্য ৫ মিনিটের ব্যাপার। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে ভূঁইগড়ের রূপায়ন টাওয়ার এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্লোগান দিতো ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। তখন আমি ছোট ছিলাম। আর যখন যুদ্ধ শুরু হলো তখন স্লোগান ছিল ‘বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। আজও আমাদের এই সেøাগান দিতে হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক বিষয়। এখন আমাদের স্লোগান দিতে হচ্ছে ‘বীর বাঙালি ঐক্য ধরো, বাংলাদেশ রক্ষা করো’। আজকে এমন একটি পরিস্থিতি এসেছে, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমার মনে হচ্ছে সামনে আমাদের সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সে ব্যাপারে আমি আপনাদের নির্দেশনা চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে জানা গেছে আমাদের দেশের স্বাধীনতার উপর আবারও হস্তক্ষেপ চলছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা মনে করি বর্তমানে যেসব জীবিত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন তাদের নিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সম্মেলন হোক। এই সম্মেলনের তারা এবং তাদের পরিবার যখন উপস্থিত হবে তখন পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারবেন তাদের বাবারা কিংবা তাদের পূর্বপুরুষরা এই দেশের জন্য কত আত্মত্যাগ করেছিলেন। একটা দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীন করার পর আমরা রাজনীতিবিদরা যত কিছুই করি না কেন তাদের লোকের সমতুল্য হতে পারবো না।
শামীম ওসমান বলেন, কিছু লোক পায়ের উপর পারা দিয়ে এই নারায়ণগঞ্জকে অস্থিরতা করার চেষ্টা করছেন। এ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সূতিকাগার। বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে বার বার নারায়ণগঞ্জের কথা বলেছেন। প্রতিটি আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের মানুষ রক্ত দিয়েছে। পঁচাত্তরের পরেও নারায়ণগঞ্জের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার দাবি এবং অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা একটি দাবি জানিয়েছি, সরকারের কাছে আমরা এই প্রস্তাব দিয়েছি এবং নারায়ণগঞ্জেও এমন একটি সম্মেলন করার চিন্তাভাবনা করছি। নারায়ণগঞ্জের যারা মুক্তিযোদ্ধা আছেন তারা যেদিন বলবেন সেদিনই আমরা এই সম্মেলন করবো। এমনিতে ইতিহাস পড়া আর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে ইতিহাস শোনা আরেক জিনিস।
অপরদিকে, কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে শামীম ওসমান বলেছেন, পাসপোর্ট অফিস হয়ে গেছে। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় হবে, ৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হবে। টেকনিক্যাল কলেজ ও ইনস্টিটিউটসহ এমন আরও বহু প্রকল্প হবে। প্রকল্প গুলো হলে একেএম শামসুজ্জোহা সড়ক বা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের আশপাশের এলাকার চেহারা আরও বদলে যাবে। রোববার দুপুর ২টায় জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এই কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল।
শামীম ওসমান বলেন, পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর পর্যন্ত ২৬শ’ কোটি টাকা দিয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ হচ্ছে। চাষাঢ়া থেকে আদমজী পর্যন্ত নাগিনা জোহা সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। ডিএনডির প্রকল্প আমরা করছি কিন্তু তারপরেও ফতুল্লার ড্রেনেজ সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারছি না।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, ডিএনডি প্রকল্পের আওতায় খাল পরিস্কার হচ্ছে। কিন্তু খালে গিয়ে যে ড্রেন দিয়ে পানি পরবে, সেই ড্রেন সংস্কার হয়নি। আমরা এই ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ এনেছি। ইতোমধ্যে কিছু টেন্ডারও পাশ হয়ে গেছে। আরও টেন্ডার পাশ হবে। এই কাজগুলো হয়ে গেলে আমার মনে হয় না ফতুল্লার কোথা কোন সমস্যা থাকবে। তারপরেও যদি কোথাও ছোট খাটো সমস্যা থাকে, তাহলে চন্দনশীল করবে।
শামীম ওসমানের ভাষ্য মতে, এতদিন জেলা পরিষদ নিয়ে কাজ করতে পারিনি। এখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল। সে আমার ভাই-বন্ধু। আমরা যদি বেঁচে থাকি নারায়ণগঞ্জে কোন সমস্যাই থাকবে না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীসহ কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com