বাবার সাথে ডিআইটি মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছে সাজ্জাত হোসেন। নামাজ শেষে বায়না ধরেছে নতুন টুপি, ছোট জায়নামাজ ও সুগন্ধি আতর কিনে দিতে হবে। নিরাশ না করে স্বাচ্ছন্দে ৫ বছরের শিশু ছেলের আবদার পূরণ করলেন আব্দুর রহমান। তিনি জানান, রমজানে তারাবির নামাজসহ বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজের অভ্যাস করাই সন্তানকে। রমজান মাস আসায় ছেলে বায়না করছে তাই নতুন টুপি, ছোট জায়নামাজ ও আতর কিনে দিয়েছি।
শুরু হয়েছে মুসলমান ধর্মলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। ইবলিশ শয়তানের ধোকা থেকে মুক্ত হয়ে ইবাদতের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা হেদায়েত প্রাপ্ত হবেন ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা। রমজান মাস মানেই ইবাদতের মাস। এই মাসে সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করানোর জন্য তারাবির নামাজ ও রোজা আদায়ের মধ্যেমে সিয়াম সাধনা করা হয়। আর রোজায় নামাজ মানেই নতুন টুপি, পাঞ্জাবি ও সুগন্ধিযুক্ত আতর। মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে টুপি, আতর, জায়নামাজ ও তসবি কেনাবেচা বেড়েছে।
সরেজমিন শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের নূর মসজিদ, বাগে জান্নাত মসজিদ, মাজদাইর কবরস্থান ও ডিআইটি মসজিদসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টুপি, আতর ও জায়নামাজের দোকানে তুলণামূলক ভিড় বেড়েছে। শুধু বড় দোকান নয়, ছোট ছোট দোকানগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। একাধিক দোকানি জানান, রমজান মাস জুড়ে ক্রেতা আরও বাড়বে।
দৈনিক গড়ে এসব দোকানগুলোতে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। তবে রমজানের মাঝখানে খানিকটা কমে যায়। কিন্তু শেষের দিকে এসব দোকানে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হয় দৈনিক গড়ে। তবে এবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যবসার বাজার মন্দা যাওয়া আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
টুপি, তজবি, জায়নামাজ ও আতর ব্যবসায়ী শাহ আলম লাইভ বলেন, সবেমাত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। এখনো ব্যবসার পরিস্থিতি বুঝা যাচ্ছে না। বাজার অনুযায়ী মোটামুটি ভালোই চলছে। মূলত রমজান মানে যারা রোজা রাখে, সবারই আতর, টুপির প্রতি একটা আলাদা অনুভূতি থাকে। এই মাসেই এসব জিনিসের চাহিদা বাড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে।
তিনি আরও বলেন, রমজান মাসই না, শবেবরাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় আমাদের মোটামুটি বেচাকেনা ভালো হয়। বিগত সময়ে করোনাসহ নানা কারণে আমাদের বেচাকেনা কমে গিয়েছিলো। আমরা আশা করি, এবার হয়তো কিছুটা বেশী বিক্রি হবে। কিন্তু বাজারে দ্রব্যমূল্যের যে দাম এতে মানুষের মধ্যে সংকট দেখা দিয়েছে। যেসব টুপি, আতর আমরা ১শ’ টাকায় বিক্রি করতাম সেগুলো আমাদের এখন দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা বিক্রি করতে হয়। এমন দামে মানুষ হিমশিত খাচ্ছে। আমাদের রমজানের শুরুতে বেচাকেনা মোটামুটি থাকলেও মাঝখানে একেবারে কমে যায়। কিন্তু শেষের দিকে আবার বাড়তে শুরু করে। সরকারের কাছে আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা থাকবে, এবার ঈদে যাতে আমাদের নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে জিনিসপত্রের দাম থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, নানা রকম নকশা ও কারুকাজে সজ্জিত টুপির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ কাজ করে বেশি। সেদিক থেকে নকশা ও কারুকাজের মান ভালো হওয়ায় এবারে বিদেশী টুপির চেয়ে দেশি টুপির চাহিদা তুলনামূলক বেশি। তবে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ওমান ও পাকিস্তানের টুপির প্রতিও ক্রেতাদের আগ্রহ আছে বলে জানান এই বিক্রেতা।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।