প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকাতে সুযোগ পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েই সেমিফাইনালে ওঠেছিল কানাডা। যখন জানা গেল শেষ চারের লড়াইয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ণ আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হতে হবে তখনই অনুমান করা গেছে অলৌকিক কোনো কিছু না হলে সেমিতেই স্বপ্নযাত্রা থামবে তাদের। তবে ফুটবল মাঠে যেকোনো কিছুই হতে পারে সেই প্রত্যাশা নিয়েই নেমেছিল কানাডা।
বুধবার (১০ জুলাই) ভোর ৬টায় নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অলৌকিক কোনো কিছুই হলো না। আর্জেন্টিনা খেলেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ণদের মতোই। কানাডা যে সেমিতে সহজ প্রতিপক্ষ সেটি প্রমাণ করলো লিওনেল মেসিরা। একপেশে লড়াইয়ে কানাডাকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ণ আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পায় কানাডা। শ্যাফেলবার্গের বাঁ পায়ের শর্ট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৮ মিনিটের মাথায় সেই শ্যাফেলবার্গই আবার একই পজিশনে বল পেলে সেটিও বাইরে মারেন। ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রথম আক্রমণের সুযোগ আসে ১২ মিনিটের মাথায়। ডিবক্সের বাইরে থেকে লিওনেল মেসির বাঁ পায়ের জোড়ালো শর্টটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কানাডার খেলোয়াড়রা পেশিশক্তির ব্যবহার করলেও আর্জেন্টিনা মাথা ঠান্ডা করে খেলতে থাকে। যার ফলও পেয়ে যায় মেসিরা।
টুর্ণামেন্টে আর্জেন্টিনার শুরুর ম্যাচে প্রথম গোলটা এসেছিল ম্যানচেস্টার সিটির তারকা আলভারেজের পা থেকে। সেমিফাইনালেও সেই আলভারেজই ত্রাতা হয়ে আর্জেন্টিনাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন। ২২ মিনিটে তার দেয়া গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। রদ্রিগো ডি পলের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষকের দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন আলভারেজ। এগিয়ে যাওয়ার আবারো সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। ৩৪ মিনিটে এবার ডি মারিয়া তার চিরাচরিত চিপ শর্টে বল গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে মারলে সামান্য উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
প্রথমার্ধের অন্তিম মুহূর্তে ডিবক্সের ভেতর সুযোগ পায় কানাডা। জটলা থেকে নেয়া আলফনসো ডেভিসের শর্ট রুখে দেন মার্টিনেজ। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধেও দাপটের সঙ্গে শুরু করে আর্জেন্টিনা। যে কারণে গোল করতেও বেশি দেরী হয়নি তাদের। ৫১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। এনজো ফার্নান্দেজের জোরালো পাস মেসির বাঁ পায়ে লেগে কানাডার জালে গিয়ে জমা হয়। এতে ব্যবধান দাঁড়ায় ২-০। পরে ম্যাচে ফেরার জন্য দারুণ চেষ্টা চালিয়েছে কানাডা। প্রথমার্ধে রক্ষণাত্মক খেলার চেষ্টা করলেও এবার উপরে এসেছিল তারা। বেশ কিছু আক্রমণ করেছিল তারা। তবে সফলতা আসেনি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাও একের পর এক আক্রমণ করে কানাডার রক্ষণভাগকে ব্যস্ত করে তোলে। ৬১ মিনিটে ডি মারিয়ার অ্যাসিস্ট থেকে আলভারেজের একটি শর্ট রুখে কানাডার গোলরক্ষক মেক্সিম ক্রিপাউ। এরপর টানা ২টি আক্রমণ চালায় কানাডা। তবে ব্যর্থই থাকে তারা। ৮৯ ও ৯০ মিনিটেও গোলচেষ্টা চালিয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশটি। তবে সফলতার মুখ দেখেনি। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই ফাইনাল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।