Logo
HEL [tta_listen_btn]

সূর্যোদয়ের পরপরই উকিলপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত

সূর্যোদয়ের পরপরই ঈদের জামাত। নগরীর উকিলপাড়া জামে মসজিদের এটা একটা বিশেষত্ব। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উকিলপাড়া জামে মসজিদে ফজর নামাজের পরপরই শুরু হবে ঈদের জামাত। গত কয়েক বছর ধরে এই মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে পবিত্র ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। মসজিদ ছাপিয়ে সড়কেও জামাতে শরীক হন দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন। অনেকে বিষয়টা ব্যতিক্রমভাবে দেখলেও উকিলপাড়া জামে মসজিদের ইমাম এহতেশামুল হকের কাছে বিষয়টা স্বাভাবিক। তার মতে, এটাই হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ফজরের নামাজ ফরজ; আর ঈদের নামাজ ওয়াজিব। দেখা যায়, ঈদের নামাজে হাজার হাজার মুসল্লি হয়। কিন্তু ফরজ নামাজ বিশেষ করে ফজর নামাজে মসজিদে হাতেগোনা মুসল্লি উপস্থিত হন। কিন্তু ঈদের জামাতে এর কয়েকগুণ বেশী মুসল্লি উপস্থিত থাকেন। তারা শুধু ওয়াজিব নামাজের সওয়াব পান। বঞ্চিত থাকেন বাধ্যতামূলক ফরজ নামাজের সওয়াব থেকে। আমাদের চেষ্টা ৫ ওয়াক্তই ফরজ নামাজের দিকে মুসল্লিদের ধাবিত করা। হয়তো মহান আল্লাহপাক একদিন আমাদের সেই মাকসাত পূর্ণ করবেন। তবে এখন পর্যন্ত ঈদের জামাতের উসিলায় মুসল্লিদের অন্তত এক ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করাতে পারছি তাতেই আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া।
জানা গেছে, বিগত ১০ বছর যাবত উকিলপাড়া জামে মসিজদে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ ফজর নামাজ শেষে সূর্যোদয়ের পরপরই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আর এর প্রচলন শুরু করেন এই মসজিদের পেশ ইমাম এহতেশামুল হক। তাঁর প্রচেষ্টা এবং মসজিদ কমিটির সার্বিক পরিকল্পনায় সূর্য ওঠার পরপরই উকিলপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়।
উকিলপাড়া জামে মসজিদের ইমাম এহতেশামুল হক বলেন, মূলত ঈদের জামাত মাঠে পড়া, খোলা ময়দানে পড়াই হলো নবীজীর সুন্নত। এখন স্বাভাবিকভাবেই লোকসংখ্যা দেশে বা বিশ্বে সর্বত্র বেড়ে যাওয়াতেই মাঠে বা খোলা ময়দানে সকলে চাইলেও একত্রে এক জায়গায় নামাজ পড়া সম্ভব হয়না বিধায় নিতান্তই অপারগতা বা বাধ্য হয়ে সব মসজিদেই প্রায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের দিন সকালে ঈদের জামাত যেহেতু মসজিদে হয় আর মুসলমানদের জন্য তো ফজরের নামাজ জামাতে পড়া একান্তই কর্তব্য। তাই আমরা চিন্তা করলাম যাতে ফজরের নামাজটাও সুন্দর হয় এবং সমস্ত মুসল্লিগণ ফজর নামাজেও শরিক হতে পারেন। তাই ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিয়েই যদি ঈদের সকালে সবাই মসজিদে আসে আর সূর্যোদয়ের অল্প পরই ঈদের জামাতটা পড়া হয়ে যায় তাহলেই এক সাথে ফজরের নামাজ যেমন ফরজ ছিলো, আর সকালে ঈদের নামাজ পড়াটা ওয়াজিব ছিলো। ওয়াজিবের জায়গায় ফজরের গুরুত্ব যেমন বেশি হয় পাশাপাশি সৌন্দর্য বজায় রেখে ঈদের নামাজ আদায় করা যায়। এসব সুবিধা চিন্তা করে মুসলমানদের ভিতের একটা উৎসাহ ও আগ্রহ দেখা দেয়াতে আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের এই মসজিদে গত কয়েক বছর ধরে এভাবেই ধারাবাহিকভাবে ঈদের জামাত ফজরের পরপরই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এলাকাবাসী জানায়, ১৯৭৫ সালে মরহুমা জাহানারা ইসলাম এই মসজিদের জায়গা দান করেন। এই মসজিদে একসাথে এক হাজারের বেশী মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। উকিলপাড়া জামে মসজিদে ফজরের নামাজের পরপর ঈদের জামাত শুরু হবার ৩/৪ বছর পর থেকে আলহামদুলিল্লাহ এখন কিছু কিছু মসজিদেও ফজরের পর ঈদের জামাত পড়ায়। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের সময় ফুটপাতসহ সড়কেও জামাতে শরীক হন দূর-দূরান্তে থেকে আসা মুসল্লিরা।
উকিলপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সদস্য শেখ মাগফুর ইসলাম পাপন বলেন, উকিলপাড়া জামে মসজিদে ২০১৫ সাল থেকে ফজর নামাজের পরপরই ঈদের জামাত হয়ে আসছে। এতে ব্যাপক মুসল্লি উপস্থিত হন। আশপাশের এলাকা ও মহল্লা থেকে অনেক মানুষ ফজরের নামাজ ও ঈদের জামাতে শরীক হতে ছুটে আসেন। এভাবে ঈদের জামাত আয়োজন করতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com