Logo
HEL [tta_listen_btn]

ট্যাক্সের ভারে নাকাল সিটিবাসী

ট্যাক্সের ভারে নাকাল সিটিবাসী

নিজস্ব সংবাদদাতা :
রাজধানী ঢাকার চেয়ে দ্বিগুণ হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানে আগ্রহ হারিয়েছে নগরবাসী। দেশের অভিজাত এলাকা গুলশানে ১২ শতাংশ হারে ট্যাক্স নেয় ঢাকা সিটি করপোরেশন, পক্ষান্তরে ২২ শতাংশ হারে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। একারণে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের লক্ষ্যমাত্র থেকে অনেক পিছিয়ে নারায়ণগঞ্জ। এদিকে দেশের সর্বোচ্চ কর দিয়েও নারায়ণগঞ্জ নগরবাসী কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে বলে নগরবাসীর অভিযোগ। আর তাতে ট্যাক্স পরিশোধে অনেকেরই বেড়েছে অনীহা। আবার কেউ কেউ এটা বোঝা মনে করছে। এতে করে বিপুল পরিমাণ ট্যাক্স প্রতি বছর বকেয়া জমছে বা আদায় হচ্ছে না, তাতে সংস্থাটির উন্নয়ন কাজের পরিমানও কমছে! বিশিষ্টজনদের মতে, ‘যোগ্য নেতৃত্বের অভাব আর অপরিপক্ক সিদ্ধান্তের কারণে সম্ভাবনার নগরী নারায়ণগঞ্জ এখন অনিশ্চয়তার পথে। সাথে নগরবাসীর মাথায় বিশাল ট্যাক্সের বোঝা।’ নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসূল অঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ২০১১ সালে স্থানীয় সরকারের অধীনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। সিটি করপোরেশন গঠনের পর থেকেই দু’মেয়াদে সংস্থাটির মেয়রের দায়িত্বে আছে সেলিনা হায়াৎ আইভী। অন্যান্য সিটি করপোরেশনের মেয়রের মতোই সিটির বাসিন্দাদের ট্যাক্সের অর্থে নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা পেয়েছে। কিন্তু দ্বিগুন ট্যাক্সের কারণে সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের অনীহা বাড়ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসূল অঞ্চলের ৫২ হাজার ৩৯৮ টি হোল্ডিং এর বিপরীতে বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৩৮ কোটি ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৮ টাকা সিটি করপোরেশনের রাজস্ব খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্র ছিল। কিন্তু আদায় হয়েছিল মাত্র ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার ৪৫৮ টাকা। অর্থাৎ আদায়ের হারের ৫৮% শতাংশ হোল্ডিংদারি তাদের ট্যাক্স প্রদান করেনি।’ ২০১৯/২০ অর্থ বছরে সিটি কর্পোরেশনের গৃহ ও ভূমি কর, ময়লা নিস্কাসন, আলো কর ও পানি সর্বরাহ খাতে সর্বমোট আদায় হয়েছে আয় হয়েছে ২৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মতে, কর খাতে আয় সৃষ্টির মূল চাবিকাঠি হলো করদাতাদের আস্থা অর্জন। এ আস্থা অর্জনের জন্য সঠিক ভাবে করের বিধিমালা প্রয়োগ, স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে কর আদায় পদ্ধতি পরিচালনা নিশ্চিত করা প্রতিটি সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টদের অত্যাবশ্যকীয়। মডেল কর তফসিল ২০১৬ অনুযায়ী, ‘২২ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ কর নিতে পারবে সিটি করপোরেশন’। সেখানে গাজীপুর সিটি ৭ থেকে ১০ শতাংশ হারে কর নিচ্ছে আর ২২ শতাংশ হারে কর নিয়েও গাজীপুর সিটির অর্ধেক হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করতে পারছে না নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। কর খাতে জনগণকে সম্পৃক্ত না করায় উন্নয়ন কম হচ্ছে দাবি করে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এড. মাহবুবুর রহমান ঈসমাইল বলেন, ‘কাঙ্খিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় না করতে পারার ৩টি কারণ রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের। তার মধ্যে অন্যতম কারণ, অনেকে নিয়মিত ট্যাক্স প্রদান করেও সিটি করপোরেশন থেকে উন্নত জীবনযাত্রার নিশ্চিয়তা পাচ্ছে না বলে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানে আগ্রহ হারাচ্ছে। আরেক শ্রেণির নাগরিক সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত উচ্চ হারের হোল্ডিং ট্যাক্সকে বোঝা মনে করে ট্যাক্স দিচ্ছে না। তাছাড়া তৃতীয় একটি শ্রেণি রয়েছে, যাদের প্রতি ট্যাক্স নির্ধারণই করতে পারেনি সিটি করপোরেশন।’ এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, ‘হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের উপর প্রতিটি সিটি করপোরেশেনের উন্নয়ন কার্যক্রম নির্ভর করে। যেখানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং ট্যাক্স মাত্র ৭% থেকে ১০%। রাজধানী ঢাকার গুলশান বনানীতে ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে ১২% । সেখানে শুরুতেই নগরবাসীর গলায় ছুরি ধরার মতো ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে ২২%। এই অতিরিক্ত ট্যাকের খড়গ চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে সরকারের উপর। অথচ সিটি কর্পোরেশন চাইলেই সর্বনি¤œ ট্যাক্স নির্ধারণ করে আদায়ের উপর জোড় দিলে নগরবাসী ঠিকই সাড়া দিতো। এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হলে নেতৃত্বদানকারী কিংবা তাদের মনভাবের পরিবর্তন আনতে হবে, পাশাপাশি কমাতে হবে হোল্ডিং ট্যাক্স।’ তবে, এ বিষয়ে মুঠোফোনে কোন রকম মন্তব্য করতে নারাজ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com