ভারতের বিতর্কিত নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোনী আইন নিয়ে চলমান বিক্ষোভ ও আন্দোলনের ফলে পিছু হটলো মোদি সরকার। এক সরকারি বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে এনআরসি করার কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।
কেন্দ্রের জারি করা তিন পৃষ্ঠার ফ্যাক্টশিটে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিস্তারিতভাবে লিখেছে যে, নাগরিকত্ব সংশোধনী একটা পৃথক আইন এবং এনআরসি একটি আলাদ প্রক্রিয়া। সংসদে বিল পাস হওয়ার পর নাগরিকত্ব আইন সারা দেশেই চালু হয়েছে। কিন্ত এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়নি। আসাম অ্যাকর্ডের নিয়ম মেনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুধু আসামেই তা জারি হয়েছে বলে ফ্যাক্টশিটে সাফাই দিয়েছে কেন্দ্র।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তাদের বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছে, শুধু ভারতীয় মুসলিম নয়, কোনও ভারতীয় নাগরিকেরই নাগরিকত্ব আইন বা এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কোনও বিশেষ একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে নয়, এনআরসি যদি হয় তাহলে তা ভারতের সকল ধর্মের মানুষের জন্যই হবে।
এনআরসিতে নাম নথিভুক্ত করা আসলে ভারতের নাগরিক রেজিস্ট্রারে নাম লেখানো এবং সেখানে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দেওয়া ভোটার বা আধার কার্ডের মতো পরিচয়পত্র দেওয়ার মতোই বলে ফ্যাক্টশিটে দাবি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ফ্যাক্টশিটে কেন্দ্র লিখেছে, নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্য নিজের জন্মের সনদপত্র বা বিস্তারিত বিবরণ এবং সেটা না থাকলে বাবা ও মায়ের জন্মের বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে।
বাবা ও মায়ের জন্মের সনদপত্রের প্রয়োজন নেই বলে জানালেও সরকারের দাবি- ভোটার, আধার বা স্কুলের পাস করার সনদপত্রের মতো যে কোনও পরিচয়পত্রও থাকতে পারে।
১৯৭১ সালের আগে পরিবারের নাগরিত্ব প্রমাণের বিষয়টি সম্পূর্ণ আসামের জন্যই নির্দিষ্ট বলে কেন্দ্র জানিয়েছে ওই ফ্যাক্টশিটে।
তবে ভারত সরকারের এই বিজ্ঞাপন ক্ষমতসীল দল বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘোষণার সম্পূর্ণ বিপরীত। এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে গোটা ভারতে এনআরসি চালু করার ওপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনে অমিত শাহ বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘কোনও সংশয় রাখবেন না, এনআরসি গোটা দেশেই হবে।’
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।