ইতালিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। মৃত্যুপুরীতে পরিণত দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭৫ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইতালিতে সব মিলিয়ে মারা গেলেন ২ হাজার ৯৭৮ জন। এখন পর্যন্ত যেকোনও দেশে করোনায় একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
করোনাভাইরাসে চীনের পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ ইতালি। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার ২০৭ জনের শরীরে এনসিওভি-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭১৩ জন। এদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ২ হাজার ৯৭৮ জন।
ইতালিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী লোম্বার্ডি অঞ্চল। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু এ এলাকাতেই মারা গেছেন ৩১৯ জন। এই প্রদেশেই করোনাভাইরাস প্রকট আকার ধারণ করেছে। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোর মর্গে জায়গা নেই, বেরগামো, লদি এলাকার কবরস্থান গুলোতে বেড়েই চলছে লাশের গাড়ির লাইন।
ইতালিতে করোনায় মৃত্যুহার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই অবরুদ্ধ গোটা ইতালি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। জনগণকে আপাতত বাড়ির বাইরে বের না হতে অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এদিকে দেশটির প্রায় ছয় কোটি জনগণকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশিও রয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটিতে জারি করা জরুরি অবস্থার মধ্যে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। গোটা ইতালি এখন থমকে আছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোনো পর্যটক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারছেন না। সরকারের কঠোর নির্দেশনা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বাইরে বের না হয়।গত এক সপ্তাহে অপ্রয়োজনীয় ঘুরাফেরার জন্য ৪৩ হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
এদিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সারাবিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করা ভাইরাসটিতে ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিশ্বের অন্তত ১৭০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৭৮৭ জনের। আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই ভাইরাসের উৎসদেশ চীন। চীনে এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ১০২ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৮৪ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসার মাধ্যম সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বুধবারই। এই ভাইরাসের সংক্রমণে এটিই দেশে প্রথম মৃত্যু। দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে।
গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে। পরে তা চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। ইতালি থেকে পুরো ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।