Logo
HEL [tta_listen_btn]

না’গঞ্জ কাশীপুর এলাকার বিধবা লাকী এখন প্রতিবেশীর বাসায়

না’গঞ্জ কাশীপুর এলাকার বিধবা লাকী এখন প্রতিবেশীর বাসায়

ফতুল্লা সংবাদদাতা:
গত মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গা নদীর পানি ঢুকে পড়ে গ্রামের ভেতরে। প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে পড়ে সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের উত্তর নরসিংহপুরের লাকি বেগমের একতলা ভবন। মুহুর্তের মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েন বিধবা লাকি বেগম। দুই সন্তানকে নিয়ে থাকছেন প্রতিবেশীর বাসায়। কথা বলে জানা যায়, দুইবছর আগে জমানো টাকা ও কিছু ঋণ করে একতলা একটি বাড়ি তৈরি করেন মো: রতন মিয়া। তার দেড় বছর পরই মারা যান তিনি। রেখে যান স্ত্রী লাকি বেগম, ছেলে মো: শাওন ও কিশোরী মেয়ে ফাতেমা আক্তার মিমকে। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরে ২১ বছর বয়সী তরুণ শাওন। পড়াশোনার পাশাপাশি কোনো রকম সংসার চালায় সে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) রাতে ১১টায় পানির প্রবল স্রোতে ধসে পরে তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। মুহুর্তের মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়ে পরিবারটি। গতকাল রোববার (৯ আগস্ট) সকালে ফতুল্লা কাশীপুর ইউনিয়নের উত্তর নরসিংহপুরে গিয়ে ধসে পড়া সেই বাড়িতেই পাওয়া যায় লাকি বেগমকে। ধসে পড়া ভবনের ভেতরে ইট, সিমেন্টের স্তুপ সরিয়ে দেখছেন কিছু পাবার আশায়। ছেলের কয়েকটা বই খুঁজে পেয়ে রোদে শুকাতে দিয়েছেন। লাকি বেগম বলেন, ‘বর্তমানে আমরা এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। একটি ঘরে তিনজন আছি কোন রকমে। ধসে পড়ার সময় সঙ্গে কিছুই নিতে পারিনি। জীবন নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। পড়ার পোশাকটাও নেই। ধ্বংসস্তুপের নিচে সবকিছু রয়ে গেছে। দেখছি কিছু বের করা যায় কিনা। নিজেকে অনেক অসহায় লাগছে।’ সে রাতের ঘটনা বর্ণনা করে লাকি বেগম বলেন, ‘প্রতিদিনের মত সেদিনও স্বাভাবিকভাবে ঘরেই ছিলাম আমরা। ফাতেমা পড়াশোনা করছিল। নদীর পানি বাড়িতে উঠছে দেখেছি কিন্তু এ ঘটনা ঘটবে কল্পনাও করতে পারিনি। সন্ধ্যা থেকেই স্রোত ছিল। রাত যখন রাতে ৯টা তখন হালকা হালক কম্পন অনুভব করেছিলাম, প্রথমে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হয়তো। কিন্তু রাত ১০টার পর বাড়ি রীতিমত কাঁপতে শুরু করলো। সবাই ভয় পেয়ে গেলাম। কোনো রকম ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এলাম। এরপরই ভাঙ্গতে শুরু করে ভবনটি। চোখের সামনে বাড়িটা ধীরে ধীরে ধসে পড়তে দেখি আমরা। কিছুই করতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই এসেছে, দেখে গেছে। জেলা, উপজেলা প্রশাসন দেখে গেছে কিছু ত্রাণ দিয়েছে আর সহযোগিতার আশ^াসও দিয়ে গেছেন তারা। কিন্তু সে সহায়তা কবে আসবে জানি না। এখন প্রতিবেশীর বাড়িতে আছি। কতদিন থাকবো? তারাই-বা কতদিন আমাদের থাকতে দেবেন? আমার স্বামী নেই। ছেলের বয়স মাত্র ২১ বছর। কীভাবে কি করবে? আগামী দিনগুলোর কথা ভাবলে দিশেহারা হয়ে যাই। এই সময় সরকার আমাদের না দেখলে আমাদের মানুষের কাছে হাত পাততে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com