Logo
HEL [tta_listen_btn]

বেদের ছদ্মবেশে মাদক পাচার র‌্যাবের হাতে মাদকসহ গ্রেফতার ৫

বেদের ছদ্মবেশে মাদক পাচার র‌্যাবের হাতে মাদকসহ গ্রেফতার ৫

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
সমাজে মাদকের ভয়াল থাবার বিস্তার রোধকল্পে মাদক বিরোধী অভিযানে অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব নিয়মিত আভিযানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য পাচার এবং মাদকদ্রব্য মজুদকারী ও বাজারজাতকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। র‌্যাব-২ সব সময়ই মাদকের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থান রেখে চলেছে। র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দল র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, এক দল মাদক কারবারী মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে নদী পথে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রীজ এলাকায় হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে আসছে। এ প্রেক্ষিতে র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দলমঙ্গলবার (৪ মে) রাত ১১টা ২০ মিনিটে মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা মধ্যপাড়া এলাকায় অবস্থান নেয় এবং সেখান থেকে সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্যমোঃ তারিকুল ইসলাম (২৩), পিতা-মোঃ আরকান মাল, মুন্সিগঞ্জ, মোঃ সিনবাদ (২৩), পিতা-মোঃ শাহাদৎ হোসেন, মুন্সিগঞ্জ, মোঃ মিম মিয়া (২২), পিতা-মোঃ আজগর আলী, মুন্সিগঞ্জ, মোঃ ইমন (১৯), পিতা-মৃত আল আমিন, মুন্সিগঞ্জ এবং মোঃ মনির (২৮), পিতা- মোঃ মানিক, সাভার, ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশীকালে তারা জানায় যে মূলত, ভাসমান বেদে দলের ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা মাদক পাচার করে থাকে। এসময়ে তারা সাথে থাকা বহনযোগ্য রান্না করার টিনের চুলার ভিতরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে আনা ইয়াবার কথা স্বীকার করে এবং রান্না করার চুলার নীচের অংশ কেটে তার ভিতর থেকে মোট ৭৭,০০০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় তাদের নিকট থেকে ছদ্মবেশ ধারণের সরঞ্জামাদি, রান্নার হাড়ি-পাতিল, বালতি, বহনযোগ্য ডিসপ্লে র‌্যাক এবং নানান ধরণের ইমিটেশন অলংকার উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামীরা পারস্পরিক যোগসাজশে নিয়মিত কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকা ও সমুদ্র পথে বাংলাদেশে আসা ইয়াবা ট্যাবলেট রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে অভিনব কায়দা হিসেবে বেদের ছদ্মবেশ ধারণ করে মাদক বহন করে নিয়ে আসত। মাদক পরিবহনের জন্য টিনের তৈরি সহজে বহনযোগ্য রান্না করার চুলার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ইয়াবা লুকিয়ে তা আবার ঝালাই করে জোড়া লাগিয়ে দিত। তারা মাদকের চালান কক্সবাজার এলাকা থেকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কখনই মহাসড়ক ব্যবহার করত না। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে তারা মহাসড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন ইজি বাইক/সিএনজি/টেম্পু ব্যবহার করে পথ পাড়ি দিত। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার ক্ষেত্রে তারা চট্টগ্রাম সিটি গেটসহ বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট এড়াতে ১ম ধাপে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে হাটহাজারী-মানিকছড়ি-গুইমারা-রামগড় হয়ে ফেনী আসতো। সেখান থেকে তারা নোয়াখালীর-চৌমুহনী-সোনাইমুরী এবং চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ হয়ে মতলব লঞ্চঘাট পর্যন্ত আসতো। ২য় ধাপে তারা সেখান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে মুন্সিগঞ্জ হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ঢাকার প্রবেশ করত। এতে করে তাদের ৪/৫ দিন অথবা কোন কোন সময় এক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেত বলে জানায়। এই দীর্ঘ সময় তারা বেদে’দের মতই জীবন-যাপন করত এবং সাধারণ মানুষের সন্দেহ দূর করতে পথের মাঝে বিভিন্ন মনিহারী দ্রব্য যেমন-চুড়ি, কড়ি, চুল বাধার ফিতা, শিশুদের কোমড়ে বাধার ঘন্টা, চেইন, সেইফটি পিন, বাতের ব্যথার রাবার রিং ইত্যাদি বিক্রি করতো। মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের কৌশলের মুখামুখি ইতোপূর্বে কখনও হয়নি এবং তারা যে রুটটি ব্যবহার করছে তাও একেবারে নতুন বলা চলে।ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র‌্যাব-২ এ ধরনের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com