নিজস্ব সংবাদদাতা:
গার্মেন্টসসহ সকল শ্রমিকদের জন্য আর্মি রেটে রেশন, বিনামূল্যে চিকিৎসা, স্বল্প মূল্যে আবাসন এবং সর্বজনীন পেনসন স্কিমের জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিকফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈমখানবিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুলইসলাম শরীফ, সহ-সভাপতি হাসনাত কবীর, সহ-সাধারণ সম্পাদক রুহুলআমিন সোহাগ। নেতৃবৃন্দ বলেন, ৩ জুন জাতীয়সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লক্ষ ৩ হাজার ৬ শত ৮১ কোটি টাকার উপস্থাপিত হয়েছে। এটা ছিল করোনাকালে বাংলাদেশে ২য় বাজেট। এ বাজেটে স্পষ্টত দেশের ধনি শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে। গরিব শ্রমজীবীরা হয়েছে উপেক্ষিত। করোনা অতিমারির প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি যেখানে স্থবির হয়ে পড়েছে সেই সময়ও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপি বেড়েছে। করোনা সংক্রমণের মধ্যে জীবনের ঝুঁকিনিয়ে শ্রমিকরা উৎপাদনের চাকা সচল রাখায় অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অথচ করোনা কালে শ্রমিকের আয় কমেছে, প্রায় ৫২ শতাংশ শ্রমজীবী মানুষ আয় কমেযাওয়ায় তাদের দৈনিক খাদ্য ব্যয় কমাতে বাধ্য হয়েছে। শ্রমিকদের শ্রম অধিকারে র মারাত্মক সংকোচন, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া, মারাত্মক অর্থনৈতিক বৈষম্য, দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার মত সংকট নিরসনের কোন সুস্পষ্টনির্দেশনা প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, পরিবহন ছাড়া মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে যে গার্মেন্টস শ্রমিকরা করোনার মধ্যে উৎপাদন আর রপ্তানির চাকা সচল রাখল, করোনায় জীবন যাপন প্রক্রিয়ার ব্যয় বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যেরমূল্য বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়া-গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সেই শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি প্রায় অর্ধেক হয়ে যাওয়ায় তারা অভ‚ক্ত অবস্থায় দিনকাটাতে বাধ্য হচ্ছে। বাজেটের আকার বাড়লেও এই শ্রমিকদের ন্যায্য মূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ, অসুস্থ তায় চিকিৎসার নিশ্চয়তা কিংবা স্বল্পমূল্যে আবাসনেরব্যবস্থা করার জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের শ্রমঅধিকার বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রাপ্তশ্রমমন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট ২০২০-২১ অর্থ বছরেছিল ২২০ কোটি টাকাযাবৃদ্ধির পরিবর্তে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৩৪ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ব্যায়মাত্র ১০৪ কোটিটাকা বাড়ানো হয়েছে অথচ শুধুমাত্র ৪০ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিককে আর্মি রেটে রেশন দিতে মাত্র ১২৫ কোটিটাকা বরাদ্দ প্রয়োজন। বাজেট বরাদ্দের এই চিত্রবলে দেয় সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশন, আবাসন কিংবা সার্বজনীন পেনশন স্কিমের দাবির প্রতিকর্ণপাত করেনি। শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রাখানাহলেও ভ্যাটের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধিরলক্ষ্য নির্ধারণ করে শ্রমজীবী মানুষের পকেট কাটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত নাকরে, তাদের জীবন মানেরউন্নয়ন নাঘটিয়ে, তাদের উৎসাহিত করতে ঝুঁকিভাতা প্রদানের মত প্রণোদনা মূলক পদক্ষেপ না নিয়ে, ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত নাকরে, শুধু মালিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে মানসম্মত উৎপাদন কিংবা সামাজিক স্থিতিশীলতার স্বপ্ন দেখা অর্থ হলো প্রচন্ড নিপীড়ন চালিয়ে শ্রমিকের দাবি দমন করা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশের নামে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের চুপকরিয়ে রাখা। নেতৃবৃন্দ বাজেট পাশের আগে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আর্মি রেটে রেশন, আবাসন, চিকিৎসা এবং সর্বজনীন পেনসন নিশ্চিত করতে বাজেটেসুনির্দিষ্ট বরাদ্দ দেওয়ার জোর দাবি জানান।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।