বন্দর সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির আহŸায়ক ও দলিল লিখক গিয়াসউদ্দিন ভেন্ডারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বুধবার (১১ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ বন্দর উপজেলার বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন গিয়াসউদ্দিন কমপ্লেক্স থেকে তাকে গ্রেফতার করে। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি শাহ্ জামান গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে আজিজুর রহমান মিঠু নামে এক ব্যক্তির স্বাক্ষর নকল করে এবং জাল দলিল সৃজনের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে এ সংক্রান্ত মামলার আবেদন করলে রোববার (৮ মে) আদালত অভিযোগের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। বন্দরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান মিঠু জানান, মহানগর জাতীয় পার্টির আহŸায়ক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী তাদের পারিবারিক দলিল লিখক। এ সুযোগে গিয়াসউদ্দিন তার স্বাক্ষর জাল করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল দলিল সৃজন করে তা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। বিষয়টি তিনি জানতে পেরে গিয়াসউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে গিয়াসউদ্দিন তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন দায়ের করেন। যার নং-১৩৩। গিয়াসউদ্দিন ভেন্ডার বন্দর উপজেলা দলিল লিখক সমিতির সভাপতি এবং জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ। তিনি উপজেলার সর্বাধিক বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি। স্থানীয়রা তাকে লজিং মাস্টার হিসেবে চিনতেন। সেই ব্যক্তি পরবর্তী সময়ে দলিল লিখক হয়ে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান। তার রয়েছে অঢেল ভ‚-সম্পত্তিসহ বেশ কয়েকটি অট্টালিকা। যার মধ্যে অন্যতম বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন গিয়াসউদ্দিন কমপ্লেক্স। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দলিল লিখক সমিতির ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ দলিল লিখকরা আন্দোলনও করেছিল। এক এগারোর শেষের দিকে সাধারণ মানুষের নানা অভিযোগে সেনাবাহিনীর হাতেও তিনি আটক হয়েছিলেন। অপরদিকে নবীগঞ্জ এলাকা থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি অবৈধ ক্ষমতার বলে নিজের সুবিধার্থে নিজ ভবনের পাশে নিয়ে আসার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শহীদনগর এলাকার ম-খন্ডের ছায়াকুঞ্জ নামের সাড়ে ১৪ একর প্লটের জমির জাল দলিল সৃজন করে মহানগর জাতীয় পার্টির আহŸায়ক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী ওরফে গিয়াস ভেন্ডার। পরে সেই জমি বিক্রি করার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। তবে, এত কিছুর পরও প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ার কারণে তার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ হয়নি। শেষতক তার জালজালিয়াতির শিকার আজিজুর রহমান মিঠুই প্রথমবারের মত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। গিয়াসউদ্দিন ভেন্ডারের গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।